কবিতা গদ্য পর্যালোচনা প্রবন্ধ 

কবিতা, পর্যবেক্ষণের ভাষা, ব্যক্তিভাষা ।। সরকার মাসুদ

কবিতা অনেক রকম। চেহারার দিক থেকে, স্বাদের দিক থেকে কিংবা বক্তব্যবিষয়ের দিক থেকে এই রকমফের। কবিতার এই বহুরূপ সাধারণ পাঠকের মধ্যে বিভ্রান্তির জন্ম দিয়ে আসছে। এরা মনে করেন কবিতা বড়জোর দু’তিন ধরনের। একজন অধ্যক্ষকে কাছ থেকে দেখেছি। ভদ্রলোক বিজ্ঞান পড়েছেন। দেশে-বিদেশে ঘুরেছেন। সাহিত্যও কিছু কিছু পড়েছেন। আধুনিক কবিতা পড়েননি বলা চলে। তাকে মন্তব্য করতে শুনেছি, ‘শামসুর রাহমানের এত নাম-ডাক। কবিতা পড়লাম। ভালো লাগেনি।’ শামসুর রাহমানই তাকে টানেনি। তিনি পঞ্চাশের প্রজন্মের একজন। তাহলে আশির বা নব্বইয়ের প্রজন্মের কবিদের কবিতা পড়লে কী রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন এই অধ্যক্ষ মহাশয়, সহজেই অনুমান করা…

Read More
গদ্য পর্যালোচনা 

ফালগুনী রায়ের কবিতায় সত্তা ও অন্যান্য ডিসকোর্স ।। মমিন মানব ।। ৩য় পর্ব

কবিতামুখ ও ফেয়ার এন্ড লাভলি পোয়েট্রিফেস নিয়ে ভাবছি। যেখানে একটা ফেস থাকে। আরও পষ্ট করে বললে বলতে হবে যেখানে একটা ফেসবুক থাকবে। এর জন্য বিভিন্ন ফ্রেন্ড হবে, যারা কেউ কাউকে চিনবে না, জানবে না (কিছুটা হয়তো চিনা/জানা থাকবে)। কিন্তু তারা ফেসবুকফ্রেন্ড থেকে বুক (ইংরেজি হলে জ্ঞানাধার; মানে বই। আর বাঙলা ধরলে তো সর্বনাশ, বুক; মানে হৃদযন্ত্র/হৃদয় যেখানে থাকে) বাদ দিয়ে শুধু ফেসফ্রেন্ডই থাকে। সে হিসেবে ফেসবুককালচার (অথবা ফেসকালচার) নিয়ে আমাদের জানাশোনা খারাপ না। ফেসকালচার থেকেই আমাদের ফেসপোয়েট্রি। অথবা পোয়েট্রিফেস। যার বাঙলা দাঁড়াবে কবিতামুখ।   মুখ শব্দটা আমরা মুখ ও মুখমন্ডল…

Read More
গদ্য পর্যালোচনা 

ফালগুনী রায়ের কবিতায় সত্তা ও অন্যান্য ডিসকোর্স ।। মমিন মানব ।। ২য় পর্ব

ফালগুনী রায়ের কবিতায় সত্তার ডিসকোর্স: সত্তার প্রকাশ বা উম্মোচন ব্যক্তি ও ব্যক্তির সম্পর্ক যেখানে স্বাধিন যেখানে একে অপরের উপর ক্ষমতায়িত নয়, সেখানে সে নিজের অস্তিত্ব নির্ধারন করতে পারে। ব্যক্তি বা সমাজ বা রাষ্ট্র বা প্রতিষ্ঠান ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্যে অন্যের অস্তিত্ব লীন করে নিজের ক্ষমতায়নের জন্যে ব্যবহার করে। সেই রূপান্তর হয় জোরপূর্বক অথবা স্বেচ্ছায়।   স্বেচ্ছায় বলতে আপাত দৃষ্টিতে স্বেচ্ছায়। কিন্তু এখানে ব্যক্তি মানসিক বা দার্শনিক বা চিন্তাগতভাবে পরাধিন থাকায় নিজের স্বাধিন ক্ষমতা বুঝতে অক্ষম। তখোন তার ক্ষমতা তথা অস্তিত্ব সে বুঝতে পারে না। তার মঝে আমি বলতে কিছু থাকে না।…

Read More
গদ্য পর্যালোচনা 

ফালগুনী রায়ের কবিতায় সত্তা ও অন্যান্য ডিসকোর্স ।। মমিন মানব ।। ১ম পর্ব

অশুদ্ধ চিন্তার এক কবিতাঅলা কবিতা মূলত কবির অনুবাদকৃত সত্ত্বা; যা অক্ষরে অক্ষরে প্রকাশিত হয়। কবি তার স্বপ্ন ছাড়া ভিন্ন কোনো সত্ত্বা নয়। তাই কবিতা গুলো কবির স্বপ্ন-দুঃস্বপ্ন আকঙ্খা-অনাকাঙ্খা প্রেম-অপ্রেম বাঁচা-নাবাঁচা সবকিছুকেই প্রকাশ করে। একই সাথে নিজেকে চিনতে গিয়ে কবি তখোন প্রশ্ন করে সবকিছুকে। তখোন কবি ধর্মের ভিতর খুঁজে পায় অর্ধমকে ইতিহাসের ভিতরে খুঁজে পায় মিথ্যাচারকে আইনের ভিতরে খুঁজে পায় আইনবহির্ভূত ব্যবস্থাকে। তাই সবগুলো বিষয়ে কবি নিজের ভিতরে নতুন এক সঙ্গা ধারণ করে। এবঙ লালনও করে। কবিতা তখোন আর আগের মতোন কবিতা থাকে না; হয়ে উঠে অকবিতা নাকবিতা অথবা অকাব্যিক কবিতা।…

Read More
গদ্য পর্যালোচনা 

ধ্বনির ভারহীন কথকতার এক নিরুপম নকশিকাঁথা ও খানিক সক্রিয়তাবাদ ।। গৌতম চৌধুরী ।। পর্ব ০১

১. আমি চাই কথাগুলোকে পায়ের ওপর দাঁড় করাতে আমি চাই যেন চোখ ফোটে প্রত্যেকটি ছায়ার। স্থির ছবিকে আমি চাই হাঁটাতে। কবি হিসাবে তখন সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের যথেষ্ট নামডাক। কিন্তু বন্ধু দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের ফরমায়েশ হইল গদ্যের জন্য কলম ধরিবার। সেই ‘উস্কানি’তে সুভাষ কিশোরপাঠ্য রংমশাল পত্রিকার জন্য কিছু গদ্য লিখিতে বাধ্য হন। পরে, সেই রচনাগুলি লইয়া প্রকাশিত হয় সুভাষের পহেলা গদ্যবহি আমার বাংলা (১৯৫১)। সেই বহিটি হইতে কয়েকটি টুকরা পড়িয়া লইয়া আমাদের এই ছোট্ট সফরটি শুরু করা যাক। ১. সুসং শহরের গা দিয়ে গেছে সোমেশ্বরী নদী। শীতকালে দেখতে ভারি শান্তশিষ্ট – কোথাও কোথাও…

Read More
পর্যালোচনা বিশ্বসাহিত্য 

এজরা পাউন্ড এর জীবন ও কর্ম ।। ক্লাইভ উইলমার, অনুবাদ- জয়ন্ত বিশ্বাস

পাউন্ডের জন্ম ইডাহো (Idaho)-র হেইলি (Hailey)-তে হলেও তাঁর বেড়ে ওঠা ও শিক্ষাজীবন কাটে মূলত পেনসিলভানিয়া (Pennsylvania)-য়। স্বল্পায়ু শিক্ষাজীবনের পাট চুকিয়ে ১৯০৮ সালেই পাউন্ড ইউরোপে পাড়ি জমান। কয়েক মাস ভেনিসে কাটাবার পরে তিনি শেষ পর্যন্ত লন্ডন-এ থিতু হন। এখানেই পাউন্ডের সাথে তাঁর আশৈশব নায়ক ডাব্লিউ বি ইয়েটস (W.B. Yeats)-এর সখ্যতা গড়ে ওঠে। ১৯০৮ থেকে ১৯১১ সালের মধ্যে তাঁর ছয়টি কাব্যসমগ্র প্রকাশিত হয়। এগুলোর অধিকাংশেই Provençal বা ফ্রান্সের প্রঁভাস প্রদেশের লোককথা এবং পূর্ববর্তী ইতালিয়ান কবিতার প্রভাব, তথা কবির অনুরাগ ফুটে উঠেছিল। তাঁর রচনারীতি আরও শানিত হয় ব্রাউনিং (Browning) এর মধ্যযুগীয় ধাঁচ এবং…

Read More
কলা পর্যালোচনা 

শঙ্খচিলঃ ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে “অন্যের ধারনা” আরাফাত হোসাইন

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে পারস্পারিক একটি অস্পষ্ট ও ছায়াচ্ছ ভাবমূর্তি তৈরির পশ্চাতে ভূমিকা রেখেছে ১৯৪৭ সালের দেশভাগ। ঐতিহাসিক এই ভূ-বিভাজন উভয় রাষ্ট্রের ভূ-রাজনীতি ও ভূ-কৌশলগত অবস্থান ছাপিয়ে মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছে প্রাচীরবন্দী এক ‘অন্যের ধারনা’ ( Sense of Others), যা পারস্পারিক আস্থা, আকাঙ্ক্ষা এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সমতা ও ন্যায্যতার মাত্রাকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। গৌতম ঘোষ পরিচালিত ‘ শঙ্খচিল’ সিনেমাতে দুদেশের মধ্যকার ‘অন্যের ধারনা’র নির্মম ভূ-বাস্তবতার দৃশ্যপট চিত্রায়িত হয়েছে। যেখানে ফুটে ওঠে সমসংস্কৃতির পরিচয়ের অন্তরালে আগ্রাসী ভূ-কৌশলগত অবস্থানের নিরিখে সামরিক শক্তি প্রদর্শন কিভাবে দু’পাড়ের মানুষের মধ্যে ‘অন্যের ধারনা’ তৈরি করে সামাজিক বিভাজন আরোপ…

Read More