গদ্য 

ধরা যাক দু’একটা ইঁদুর এবার—।। হাসিন এহ্সাস লগ্ন

বার্জার পেইন্টের ঝাঁঝালো ঘ্রাণ আমাকে সবসময় টানে। নেইলপলিশ আর স্পিরিট। কাঠের দোকানের পাশ দিয়ে যাবার সময় বার্নিশ। ছোটবেলা থেকে এখনও অবধি নেইলপলিশ খাই। এলোপাতাড়ি মেখে থাকে ঠোঁটের আশপাশে। ওই ছোটবেলায় ছেঁড়া জুতার বিনিময়ে কটকটিঅলার পেছনে ছুটতে ছুটতে, কিংবা কাকের নিয়ে যাওয়া সাবানের পেছনে দৌঁড়োতে দৌঁড়োতে একসময় দেখলাম আমার ভালো লাগছে না। কিছু করছি না। কোথাও যাচ্ছি না। সেসময় এক বন্ধু জুটে গ্যালো। সে বলছে, my weariness amazes me. সে নাকি বিধ্বস্ত কোনো ভাঁড়ের সুর নিয়ে আর ভাবতে চায় না। তারপর একদিন পেলাম অন্যজনকে। ‘বুড়ি চাঁদ গেছে বুঝি বেনোজলে ভেসে? চমৎকার!…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- জরিনা সুন্দরী ও খোয়ারিমঙ্গল ।। সৈয়দ রিয়াজুর রশীদ

খোয়ারিগ্রস্থ প্রাতঃকাল। হিমের মধ্যে বসে থাকা মানবের শরীর জুড়ে রমণে ব্যস্ত মেয়েলোকের নিশ্বাসের উত্তাপ–ছিনালি রোদের আদর–অনুভব করতে-করতে হারিয়ে গিয়েও বেশি দূর যেতে পারলো না সে। সবটা উপভোগ্য হলো না–সহসা হানা দিল হাতে ধরা খামের ভেতর উল্লিখিত গুরুতর এক অভিযোগনামা। বলা হচ্ছে মানুষজন নাকি প্রমোদকর দিচ্ছে না ঠিকঠাক; রীতিমতো চালিয়াতি চলছে। এই কাতারে তার পাক্কা অবস্থান দেখে-শুনে-বুঝে মিলিয়ে দেখে নিজেকে এতদিন উপভোক্তা হতে অকস্মাৎ এক্ষনে ভুক্তভোগী হিসেবে পরিণতি ও দীর্ঘশ্বাসের ডালপালা। ইতোঃমধ্যে জনসংখ্যার ফাটাফাটি অবস্থা দেখে গরম হয়ে যৌন-সঙ্গমের উপরে প্রমোদকর বসিয়ে দেয়া হয়েছে উচ্চহারে। ঘোষণা আছে যে, দুইজনের বেশি সন্তান…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- রস খাইয়া হইয়া মাতাল ।। ‌‌অসীম নন্দন

[গল্পের সকল চরিত্র এবং ঘটনা কাল্পনিক। বাস্তবতার সাথে মেলাতে গেলে লেখকের কোনো দায় থাকিবে না; দায় কেবল এবং কেবলমাত্র পাঠকের!] আমরা বহু বহু বছর আগেই মিথোলজি থেকে স্বর্গলোক, মর্ত্যলোক এবং পাতাললোকের ধারণা পেয়েছি। ধারণা বলতে শুধু ধারণা নয়। পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ। একেবারে ছবিসহ! পৃথিবীতে আছে হাজার হাজার ধর্ম এবং মিথোলজি। তবে এই তিনটি ‘লোক’ সম্পর্কে প্রায় সকল মিথোলজির ধারণায় বিশেষ সামঞ্জস্য আছে। যেন এক বন্ধুর বাড়ির আর্কিটেক্ট এবং ইন্টেরিয়র দেখে আপ্লুত হয়ে, অন্য আরেক বন্ধু সেই ডিজাইনে হালকা পরিবর্তন এনে, একই রকমভাবে নিজের বাড়িটিও তৈরি করেছে। হয়তো পশ্চিমের দেয়ালটা বন্ধুর পছন্দ…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- আমারে ডুবিয়ে দাও মদ ।। এলিসন চাকমা

জোছনার আলো ফুটেছে। দূরে ঝিঁঝি পোকারা ডেকে চলেছে অবিশ্রান্ত। চাঁদের আলো ঝোপঝাড়ের পাশে কলকলে বয়ে চলা ছোট্ট ঝিরির গায়ে লকলকিয়ে প্রতিফলিত হয়ে চারপাশকে কেমন যেন মোহাবিষ্ট করে তুলছে। তার সাথে আসন্ন শীতের ঠান্ডা হাওয়া, শিশিরে ভেজা মেঠো পথ- যেন এক মায়ালোকের সৃষ্টি করে চলেছে। গেয়ো পথ মাড়িয়ে অদূরের পাহাড়টার দিক এগিয়ে চলছে এক মাতাল। পা এক কদম আগায়, তো দেড় কদম পিছিয়ে যাবার মতো অবস্থা। ‘আজ পেটে একটু পড়েছে বেশী’- ভাবে সে। মাথা ভারী, চোখ দুটো বুঁদ হয়ে ঝিমিয়ে আসছে। এই অবস্থায় মাতাল না হয়ে থাকাটা যেন দুনিয়ার সবচেয়ে কঠিন…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- পাহাড়ি মদ – প্রাইং বা আরা ।। কাজল শাহনেওয়াজ

জলপাইর জেলি বানানোর পর সন্ধ্যায় অনেক দিন পর পাহা‌ড়ি প্রাইং পান করা হল। সুদুর খাগড়াছ‌ড়ি থে‌কে ক‌বিতা অন্তপ্রাণ নয়ন ভাই নি‌য়ে এসে‌ছে। তার এক পাহাড় উন্নয়ন করা ‘মস্ত বড় অফিসার’ বন্ধু দি‌ছে। প্রায় ১০ লিটার থে‌কে কিছু খে‌তে পার‌ছে, অনেকটাই রেষ্ট হাউসের ছা‌দে রে‌খে আস‌ছে। আর ভয়ডর বু‌কে নিয়া ঢাকা আনছে ২ লিটার। অত্যন্ত উন্নত মা‌নের ছিল জিনিসটা। প্রাইং এ পাহা‌ড়ি হার্ব দি‌তে হয়। ম‌নে হয় যে বানাইছে, ত‌ার মনটা খুব ভাল। তিনজনে অর্ধেকের বেশি পান করা গেল না। গতকাল সারাটা দিন গা থে‌কে প্রাইংয়ের গন্ধ বেরুচ্ছিল। ম‌নে হ‌চ্ছিল কোন…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- মদ, বমি ও নদীর গল্প ।। অং মারমা

লাব্রেঅং। ছোটবেলা থেকে সে সেলুনে চুল কাটাতে পারেনি। এই দুঃখটা সে অনেকবারই তার মা কে জানিয়েছে। আর মা জানিয়েছে তার বাবাকে। তার বাবা টাকার খরচ ভয়ে কাউকে জানাতে পারেনি। বহুদিন বাদে আজ প্রথম তার বাবা তাকে নিয়ে সেলুনে গিয়ে চুল কাটাবে। ছেলে বড় হয়েছে। ইস্কুলে পড়তে যাবে। তাকে ত আর আগের মত করে ব্লেডে টাক্কু মাথা করে ছেড়ে দিলে চলবে না। তাকে নিয়ে হাসাহাসি আর বিদ্রুপের ঝড় পড়বে সারা ইস্কুলে। আর সেই ঝড়ে ছেলে একাই ভিজবে না। সাথে যে তার মাথাটাও ভিজবে। দারিদ্রতার ও ত একটা সীমা থাকা দরকার। এই…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- মদ ও অভিজ্ঞতার ঝুলি ।। জবা রায়

জীবনের ঝাকি খেয়ে যেভাবে টলছি তার মদ না খেলে চলে? মদ হলো গুগল আর্থের মতো এর ভেতর দিয়ে আমি টলটে টলটে পৃথিবী ভ্রমণের অভিজ্ঞতা যোগ করি। মদ শব্দটা শুনলে হঠাৎ করে আনন্দ লাগে! ফুরফুরে আনন্দে তলটে থাকি! এ আনন্দের কারণ খুঁজতে গিয়ে মনে হলো হাজং ভাষায় মদকে মদই বলে! তাই ছোট থেকে কষ্ট করে বাংলায় মদ শব্দটাকে হাজং ভাষায় অনুবাদ করে বুঝতে হয়নি। কিভাবে জানি ছোট থেকে মদের সাথে খেলাধুলা করে বয়স বাড়তে থাকে! ছোটবেলা কেটেছে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি গ্রামে। বিভিন্ন উৎসব, পূজা-পার্বণ, বিয়ে বাড়ি কিংবা অতিথি এলে আনন্দের পানীয়…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- মাতাল সার্কাসম্যান ।। সোয়েব মাহমুদ

আমার একপকেটে ছিলো সুনীল সমুদ্র, একপকেটে আকাশ। আমি হেটে বেড়িয়েছি হেলসিংকি, পাফোস, ফ্রাঙ্কফুর্ট, জেনেভা, ইস্তাম্বুল, সেন্টপিটার্সবার্গ, জেনোয়া,বুয়েন্স আইরিস,বোগোটা অথবা লিমা সহ নাম হারিয়ে ফেলা বহু শহর। আমি জীবনকে খরচ করেছি দেদারসে, দুহাতে দুপকেটে যা ছিলো পুরোটাই। জীবনকে উড়িয়েছি কফিশপে, পুড়িয়েছি অহর্নিশি রাস্তার ধারে জ্বলে থাকা পেরিপতেরো অথবা ২১ উর্ধ্ব নারী প্রবেশ নিষিদ্ধ আইয়ানাপায়। আমি একদিন হাসতে হাসতে খরচ করেছিলাম আয়ু, বলেছিলাম সঞ্চয় শব্দটি লিখতে আদতে কয় অক্ষর প্রয়োজন? আমি একদিন চীতকার করে ভাঙিয়েছিলাম গ্রীকপূরাণের ভূল। ট্রয় নগরী আসলে তুরস্কের এককোনে জেগে থাকা ইতিহাসের ভূল বৃদ্ধ। এভাবে আমি ১৫তে হয়েছিলাম ২২…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- খেও, কম কম মাঝে মাঝে ।। জিয়া হাশান

অফিস থেকে বাসায় ফিরে দেখি বউ নাই। খুঁজে দেখি তার জামা-কাপড়, শাড়ি-গয়না সব হাওয়া। তার মানে নিজের সব কিছু নিয়া সে চলে গেছে? আমারে না জানায়ে পলায়নের পথ ধরেছে? রুমের টেবিল হাতড়াই, কাগজপত্র ঘাটি- কোনো চিরকুট ? না তার কোনো কিছুরই সন্ধান মেলে না। আমাদের বিয়ে হয়েছে মাত্র কিছু দিন আগে। তার এখনো মাস পর হওয়া বাকি। হঠাৎ করে তড়িঘড়িতে গাঁটছড়া বাঁধতে হয়েছে। ফলে নতুন ফ্যামিলি বাসা নেবারও সুযোগ মেলেনি। তাই পুরানো ব্যাচেলার বাসাতেই বউ তুলেছি। সকালে তাতে তারে রেখে অফিসে গেছি। দুপুরে, সকালের শিফটের কাজ শেষ করে আড়াইটার দিকে…

Read More
কবিতা 

মদসংখ্যা- ম্যেরী ক্রিসমাস এবং একপেগ চিয়ার্স…! ।। হেনরী স্বপন

আজকাল প্রতিবছর এমোনই হয়, আমার স্ত্রী-কন্যা যখন ক্রিসমাসের রাতে বিশেষ প্রার্থনার জন্য চার্চে চলে যায়, আমি তখন একলা ঘরে দামী কোনও ব্রান্ডের ওয়াইন খেতে খেতে ম্যোৎজার্ট আর মান্নাদে’র কণ্ঠের শ্যামা সংগীত শুনেই এই সময়টা দারুণ কাটাই। অন্তত বিগত পঁচিশ/ ত্রিশ বছরের ক্রিসমাস উদযাপনের নিয়মিত ফিরিস্তি আমার এতাটুকই। কারণ, পাদ্রীদের পরিশুদ্ধ মন্ত্রে উচ্চারিত খ্রিস্ট জন্মের মানব সৃষ্ট এই মহোৎসবে আজকাল আর চার্চের দুয়ার মরাই না কবে থেকে? সে কথা বলা খুবই মুশকিল। তবে, কৈশোরে কিংবা প্রক-যৌবনে গির্জার ঢং-ঢং শব্দে বেজেছি আনেক…! যদিও পার্থিব সেই ঝড়ো বাতাস এখন আর আমার কক্ষপথে নেই।…

Read More