কবিতা 

এ্যালেইনা হোসেনের কবিতা

ফেইট অফ দ্যা ফ্যানাটিক

প্রেমিকার মুক্তমনের সাথে ঘষা খেয়ে উঠে গেলো জীবনের ছাল

 

ফার্মেসী ব্যবসায়ে টান লাগা–      চোখ

    মাথানত                                  ওষ্ঠ

যাদুভেষজে আর                   দেয় না অঙ্গীকার

 

কোনো ওষুধ নেই                  মলম নেই 

ব্যান্ডেজ নেই                      প্রতিকার নেই

                জীবনের ছাল নেই!

 

মামলা চললো                                      কুষ্ঠ আইনে

 আদালতে দেখালাম              ভিনগ্রহ মাংসের চালান

          কাঠগড়া বিস্ফোরণ– ‘অর্ডার অর্ডার!’

 

প্রমাণিত–

‘চামড়া উনি ব্যাংকে ডিপোজিট করেন কিন্তু সুদ খান না’

 

তর্কবিদ্যার আগুনে শিক্ষিত বাদী উকিলের ঘরে আজ মাঘের বাপ! তার পরিবার আজকাল শুধু নিরামিষভোজী।

 

মুক্তমনের সাথে ঘষা খেয়ে উঠে যায় জীবনের ছাল 

 

মানসাবরণ স্মৃতিতে                বাদী আত্মকারাবাসী

বরফে জমা                       বন্দী মাংসস্তূপ উথাল-পাতাল                          হাতড়ানো  

       পিণ্ড পিণ্ড হৃৎ খুঁজে কেনো বিবাদী হৃদয়!   

 


 

অনিকেত দহনে যেভাবে বিশ্রাম আসে

ইদানীং অ-স্থিরে নড়চড়হীন বসে আছে পাখিদের নেতা । মদ হাতে ভাল্লাগেনা টাইপ অস্থির হলে নেশায় ঋদ্ধ পালকেরা ঘুর্ণি ঝরে না।

অগোছালো কাপড়ের মধ্যে থেকে নেপথলিন, ভূমিকা বদলাতে চেয়ে পারফিউম ব্যাগে ঢুকে যাচ্ছে

   (অথবা তার বিষ, খুশবুর চামচামিতে ছদ্মবেশী হতে চেয়েছিলো)

শব্দ হাতরাই, সুতি শিফন জর্জেট কাতান জামদানী ইত্যাদি সব অব্যবহৃত এক্সপেন্সিভ শব্দ। কোনো শব্দই আমার হাতে তার বুননের ধারণা অনুভব ছোঁয়াচ্ছে না। বরং হাতের ফাঁকে ফাঁকে উঠে আসছে তেলাপোকা দহনের সব ছিন্নবিচ্ছিন্ন সচল ডানা! 

আঁতকে ওঠার কথা 

নিহিলিজম– এসবে বমির বদলে গড়গড় প্রেম করে দেয়।।

 


 

রন্ধ্রচালিত যুদ্ধবিমান 

কলসীতে

প্রাপ্তবয়স থেকে খালি হওয়া ভরালাম।

তল পর্যন্ত খালির তরলে

টইটম্বুর ঝুনঝুন! 

রুমালী রুটির ফ্রেমে ভুনা মাংস সেলাই ফোঁড়

এক মানসিক প্রতিবন্ধী বাচ্চার জন্য, ক্লাসরুমে প্রিয় সুফিয়া বুয়ার ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকার অনুমতি!

তৌফিকের পা, চোয়াল ও কান-ভিলেনের গুলি খেয়েও নায়ক মেধা— যেভাবে চিবিয়ে ছিঁড়েছিলো সুস্থ বাচ্চাদের মার্কশীট 

হোমওয়ার্ক না করেই বন্ধুদের সাথে খেলতে যাওয়ার বায়না

আব্বুর বেতের ভয়টা পরে তাঁরই দেওয়া লজেন্সে গুড়ো গুড়ো ছোট শোষণ 

ব্যাডমিন্টন খেলায় খালাতো ভাইবোনদের প্রত্যাখ্যান—

নানুর কাছে বিচার , আর ব্যাডমিন্টন ব্যাটের জালের ফুটোগুলোয় তাঁর আগুন ছাঁকার দাবি নিয়ে—

ক্ষুদ্রকায় একা পায়ের চেয়ে বিশদ ঝুলে থাকা

মায়ের মাথা ঘোরা রোগে ড্রইংরুমের দামী শোকেজটার প্রায়ই হেলে যাওয়া দিগবিদিক

এবং তাঁর জিভকাটা মূর্ধন্য-ষ তে কার যেনো নামের বানানের বুক তছনছ! 

আব্বুর একশত লিচু কিনে আনার সাথে তার দশ কোটি ত্রুটি, খোসার সাথে লাল গোলাপি শৈল্পিক নিক্ষেপ

ছোট বোনের সাথে বোকা বোকা অন্যায়ে—

তার অতটুকু শরীরে হাঁটুর তলে 

কাটা যাওয়া মাথা ভেসে থাকার সূত্র!

আর সহোদরা দৃশ্যে যতো কাষ্ঠল পৌরুষ রোপন, তা হতে পৃথিবীর কাঠঠোকরাদের সুরক্ষার জন্য অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী পাখিদের কাছে আবেদনপত্র

ভাইয়ের সদ্য জন্মে আমাদের নাচের যতো মুদ্রা

বড় হতে হতে তার সেই এলাকা ধ্বসানো বৃষ্টির ক্ষতিপূরণে খরচ 

এমনকি যুদ্ধের পর, স্বাধীন দেশের প্রথম নবোজাতকের পতাকা কাঁথায় এক রাত ঘুমানোর আবদার!

সব খালিতে কলসীর গলা ধরলো।

আর এভাবেই—

খালি কলসী বেশি বাজার রাক্ষুসী তরঙ্গে, দেশের গোটা নদীমাতৃত্বকে ভাঙন জরায়ু বলা হয়

 


 

বোধগ্রাফিক্স

কলমের লবণে রক্তার্থ লিখে দেয়া কবি বলেন

‘শব্দের পুকুরে ছুড়ে মারো বোধের ঢিল!

উঠে আসবে স্নিগ্ধময়ী নগ্ন কবিতা।’

দৌড়াচ্ছে সময়, অনর্থ সংগ্রামে

লৌকিক চোখে পৃথিবী স্থবির।

গোধূলীভ্রমে মেঘও পরে নেয় নীল লেন্স 

নেপথ্যে অন্ধকার

বিধবার শরীর কুমারী করে তোলা অন্ধকার!

রাতের আরশিটা ঘোলাটে হয়ে ওঠে অবচেতন শিশিরে

চন্দ্র হাত বাড়িয়ে মুছতে গিয়ে দেখে, গ্রহণ দাঁড়িয়ে হাসছে!

প্রার্থনারত হাতের তালুতে সি-স্য ওঠানামা মহাশূন্যের

মহাশূন্য, সেও তো পাঞ্চক্লিপ কারাগার!

কারাগারে কেনো ঈশ্বরের চুল খোঁজা হয়?

উড়তে উড়তে ধরে ফেলো তাকে, ক্ষুধার্তের সামনে থালাভরা কারিশমার গরম ধোঁয়ায়

 


 

রঙকানার থিসিস

‘সন্ধ্যা হবে হবে’ জাফরান থেকে

দেখো কয়টা রঙ

আলাদা করা যায়।

যেকোনো 

একটাতে

নিঃসন্দেহে

আওয়ার গ্লাসে ধুলোর গতি

কিছুক্ষণ

ঘামে মন্থর। 

প্রস্থানের আগে সূর্যের এটুকু বেশি থেকে যাওয়ায়

মাগরিবে সুর সাধে সূর্যোদয় মুয়াজ্জিন।।।

Related posts